Tuesday, 13 August 2024

দক্ষিণ ২৪ পরগনা বেড়াতে যাব সেরা তিনটি জায়গায়

 

বকখালি

প্রথমে যে জায়গাটার নাম না বললেই নয় সেটা হচ্ছে বকখালি | বাঙালি খুবই প্রিয় জায়গা |এখানে সমুদ্র তর দিগন্ত বিস্তৃত এবং সোনালী বালুকাময় পরিবেশ এবং মৃদুমন্দ ঢেউ এবং প্রাকৃতিক হওয়ার দর্শকদের বারে বারে আকর্ষণ করে। বকখালি পাশেই রয়েছে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য ,এই ম্যানগ্রোভ অরণ্য যা পশ্চিমবঙ্গ  , বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে  এবং বিভিন্ন রকম প্রাণীর এবং পৃথিবীর বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার এই ম্যানগ্রোভ  সুন্দরবন দেখা যায় |

                       বকখালিতে রয়েছে প্রচুর  হোটেল এবং কম এবং বেশি দামের হোটেল | সবরকম পেয়ে যাবেন এবং রাস্তার ধারে রয়েছে অজস্র ছোটখাটো রেস্টুরেন্ট , এখানে এখানকার মাছভাজা এবং কাঁকড়া ঝাল আপনি অবশ্যই খেতে ভুলবেন না | বকখালীর আশেপাশে ঘুরে দেখবার জায়গা গুলো হচ্ছে ফ্রেজারগঞ্জ  , যেটা আপনি পায়ে হেঁটে যেতে পারবেন , এটা একটা মৎস্য বন্দর , এখানে মাছ চাষ করা হয় | হেনরি আইল্যান্ড  যেতে গেলে ,আপনাকে একটা একটা ভ্যান বা টোটো ভাড়া করে আপনি ঘুরে আসতে পারেন , তারপরে দেখতে যাবেন জম্বু দ্বীপ | জম্বু দ্বীপ যেতে গেলে আপনাকে একটা ছোট ট্রলার বা নৌকো ভাড়া করতে হবে , মোটামুটি দেড় ঘন্টা এবং ৪৩ ৪৫০ টাকা নেবে | জম্বু দ্বীপ প্রাকৃতিক পরিবেশ পাখি এবং যারা প্রকৃতি ভালবাসেন তাদের জন্য একদম আদর্শ  , সমুদ্রের নির্জন প্রাকৃতিক পরিবেশে আপনি এখানে সময় কাটাতে পারে|

 

                         বকখালি কিভাবে যাবেন ?

শিয়ালদা থেকে নামখানা ট্রেনে উঠে নামখানা অথবা কলকাতা বা ধর্মতলা থেকে বাসে আসবেন নামখানা  , সময় লাগে মোটামুটি সাড়ে চার ঘন্টা  | ট্রেনে আসলে মোটামুটি আড়াই ঘন্টা সময় লাগে | এখান থেকে টোটো অটো  , বাসে আসবেন বকখালি বাসস্ট্যান্ড  ,সময় লাগে প্রায় ৪৫ মিনিট | ট্রেনের ভাড়া মোটামুটি 22 থেকে 25  টাকা এবং টোটো বা অটো বা পাশের ভাড়া মোটামুটি ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে আছে।

 

মৌসুমী আইল্যান্ড

                                              এরপর যে জায়গাটার নাম বলবো সেটা হচ্ছে মৌসুমী আইল্যান্ড | মৌসুমী আইল্যান্ড খুব সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করেছে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে| বিভিন্ন রকম কটেজ করে উঠেছে |এই কটেজ গুলো বেশিরভাগই টেন্ট টাইপের এবং কিছু কিছু  মাটির বাড়ি আছে | আপনি এখানে এসে একবেলার জন্য এসে উপভোগ করে চলে যেতে পারেন  , আবার রাত কাটাতেও পারেন  |এখানে আপনি এসে নদীর তীরে নদীতে স্নান করতে পারবেন , নদীর তীরে পায়চারি করতে পারবেন |দূর থেকে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য দেখতে পারবেন |  Tent- এর মধ্যে বিনোদনের আয়োজন করা হয়, যেমন বন ফায়ার বিভিন্ন রকম খাবার দাবার এবং মাছ উৎসব এইসব আয়োজন করা হয় |

                    এখানে এসে আপনি ক্যাম্পে বসে দোলা খেলে খেতে নদীর উপভোগ করতে পারেন এবং এখানে যে ক্যাম্প রয়েছে ,ক্যাম্পের খাওয়া-দাওয়া কিন্তু দারুন | মোটামুটি ধরে সকালবেলা আপনি গেলেই ডাবের জল পেয়ে যাবেন , তারপর জলখাবারের লুচির ঘুগনি পেয়ে যাবেন | বেলায় মোটামুটি  ভাত   ভাজা ,ইলিশ মাছ আর চিংড়ির মালাইকারি ,চাটনি ,পাপড় , কোলড্রিংস বিভিন্ন |

                             তাছাড়া উত্তম ব্যবহার তো রয়েছে  ,আপনারা যখন খুশি চলে আসতে পারেন মৌসুমী আইল্যান্ডে ,এলে অবশ্যই আগে থেকে ক্যাম্প  বুক করে আসবেন, কিন্তু ছুটির দিনগুলোতে ক্যাম্প ভর্তি হয়ে যায় এবং এসে ফিরে যাওয়াটা খুব খারাপ লাগে | তাই আগে থেকে ক্যাম্প বুক করে আসাটাই বেটার |

 

কিভাবে আসবেন মৌসুমী আইল্যান্ডে ?

                                    মৌসুমী আইল্যান্ডে আসতে গেলে, আপনাকে কলকাতা থেকে নামখানা  ট্রেনে অথবা কলকাতা থেকে নামখানা বাসে আসতে হবে |বাসে এসে আপনাকে  অটো বা টোটো করে দোষ মাইলে  যেতে হবে | দশমাইল বাজার থেকে আবার অটো করে পাতিবুনিয়া ঘাট যেতে হবে। পাতিবুনিয়া ঘাট থেকে আপনাকে ফেরি পার করে আবার , টোটো চেপে আপনার নির্দিষ্ট ক্যাম্পে যেতে হবে | কখনো কখনো বিশেষ করে শীতকালে ছুটির দিনগুলোতে পাতিবুনিয়া ঘাটে প্রচুর লাইন পড়ে যায় কারণ এরা খুবই লঞ্চে সীমিত | কিন্তু সেই সময় পর্যটকের  ধল নামে মোটামুটি | ক্যাম্পগুলোর একেকজনের জন্য সারা দিনে থাকা খাওয়া বাবদ ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা নেয় , আর আপনি যদি এক বেলা গিয়ে খেয়ে চলে আসেন মোটামুটি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা লাগে |

 

পাতিবুনিয়া

 

                        যেটা খুব সম্প্রতি  একটি নতুন টুরিস্ট হিসাবে জনপ্রয়তা অর্জন করেছে | নামখানার আশেপাশের গড়ে উঠেছে তার নাম হলো পাতিবুনিয়া |এখানে লোকেরা আবার সমুদ্রের বিচ বলে থাকে আবার কেউ কেউ বললে নদী | যাই হোক সে বিতর্কে না গিয়ে আমরা , পাতিগুলির কিভাবে যাব ? কি আছে ? কি করব ?

                                 একটা নির্জন জায়গা এখানে জলরাশি দেখতে পাবেন এবং সমুদ্রের মৃদুমন্দ হাওয়া পাবেন এবং প্রকৃতির নির্মল একটু হেঁটে গেলে এখানে একটা জঙ্গল দেখতে পাবেন | এখানে তারা এখানে গাইড প্রোভাইড করে জঙ্গল টা ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য ,আপনারা হেঁটে যেতে যেতে মরা কচ্ছপ দেখতে পাবেন প্রচুর ,পরিমাণে বড়  ঝিনুক দেখতে পাবেন এছাড়াও জঙ্গলের মধ্যে অনেকটাই প্রবেশ করতে পারে  | হোটেলের যে লোকটি আমাদের সঙ্গে গেছিল তিনি জানালেন এখানে জঙ্গলে নাকি হরিণ পাওয়া যায় | তাছাড়াও আপনারা এখানে বেশ কিছুটা সময় কাটানোর  পর সন্ধ্যেবেলা ,এই এখানে তিন-চারটে যে রিসোর্ট আছে , বন ফায়ারের ব্যবস্থা আছে এবং সন্ধ্যেকালে কিছুটা নাচ গান অনুষ্ঠান হয় পরদিন সকালবেলা আপনার স্নানও করতে পারেন অথবা একটা ছোট নৌকা নিয়ে আপনারা কাছাকাছি ঘুরেও আস্তে   পারেন |এইখানে যে নৌকা গুলো পাওয়া যায় সবই মাছ ধরার নৌকা , ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ঘন্টা |আপনি যেরকম নেবেন সেরকম আপনার অনেক দূর থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে |মোটামুটি ভালোই এবং আপনাকে সমুদ্রের সমুদ্রের ঈগল যেগুলো আছে সাধারণ জলে ভেসে বেড়াচ্ছে এবং আপনি যখন নৌকো চলে যাবেন তখন আপনার চারিপাশে এরা ঘুরতে থাকবে |দৃশ্যটা অপূর্ব আমি ভিডিও তো দিয়ে দিলাম |আপনারা দেখতে পারেন |এখানে কি রিসোর্ট গুলো কোনটাই কিন্তু হোটেল নয়, এগুলো এক ধরনের ছোট ছোট রিসোর্ট এবং এর দেয়াল কিন্তু পাকা নয় ,দেওয়াল গুলো হচ্ছে কাঠের এবং মাথাটা খড় দিয়ে এবং অনেকগুলো ঘরের জন্য একটাই কমন টয়লেট রয়েছে |

No comments:

Post a Comment

বাঙালির বেড়ানো সেরা চারটি ঠিকানা

  বাঙালি মানে ঘোড়া পাগল | দু একদিন ছুটি পেলো মানে বাঙালি চলল ঘুরতে | সে সমুদ্রই হোক , পাহাড়ি হোক বা নদী হোক। বাঙালির ...